Description
সুন্দরবনের মধু কিভাবে আপনার কাছে পৌছে? গভীর রাতে মৗ্যবক্স নিয়ে ম্যাগের কয়েকটি ট্রাক নদীর পাড়ে দাড়িয়ে।গন্তব্য সুন্দরবনের সর্বচ্চ সিমানা। যেখানে লোকালয় শেষে শুরু হয়েছে গভীরন জঙ্গল।এখন পাড় হতে হবে সুন্দরবন এবং লোকালয়ের মধ্যবর্তী এ নদীটি।এই নদীতে ছোট ছোট ট্রলার ছাড়া পার হওয়ার মত বিশেষ কিছু নেই।পূর্বে প্রায় ২-৩ বার এই নদীতেই আমাদের মৌবক্স সহ কয়েকটি ট্রলার ডুবেযায়।ম্যাগের মৌয়ালদের কোন ক্ষতি না হলেও,মৌবক্স সহ মালামালেরর প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। যাইহোক আল্লাহর শুকরিয়া, এবার আমরা ভালোভাবে নদী পার হতে পেরেছি। আজানের খুব হালকা শব্দ আসছে ….। বোঝাই যাচ্ছে লোকালয়ের মসজিদে ফজরের আজান হচ্ছে।
ভালোভাবে নদীর কিনারে আসতে পারলেও আরেকটা সমস্যা দেখা গেল। নদিতে এখন ভাটা। পানি একেবারেই কমে গেছে। যার কারনে নদীর পারে শুকনা জায়গা থেকে অনেকদূরে ট্রলার থামাতে হয়েছে। বিশাল বালুচর হেটে হেটে স্বাভাবিক ভাবে একজন মানুষের শুকনা জায়গায় পৌছাতে অনেক কষ্ট হয়েযায়,যেখানে ট্রলারে থাকা এতগুলো ভারি মৌবক্স নিয়ে বিশাল বালুচর পৌছানোর কথা ভাবতেই কর্মিদের খারাপ লাগছে।কিন্তু কিছুই করার নেই। জোয়ার আসতে এখনও প্রায় ৪-৫ ঘন্টা। এমনিতেই মৌবক্সের মুখ আটকানো হয়েছে প্রায় ১০ ঘন্টা হয়ে গেছে। এত বেশি সময়ধরে মুখ আটকানো থাকলে ভিতর তাপমাত্রা অস্বাভাবিক হয়ে মৌমাছি সব মারা যেতে পারে।
দুই দিন আগে আসা ম্যাগের আরও একটা প্রজেক্টের কর্মীদের খবর দেয়া হল।এক সাথে করলে কাজ কিছুটা কমবে।টানা দুই ঘণ্টা কাজ করার পর অবশেষে সুন্দরবনের সর্বোচ্চ সিমানায় প্রজেক্ট স্থাপনের কাজ শেষ হল। কিন্তু বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ এখনও হয় নি, সকালরে সূর্যের কিরণ আসার আগেই সকল বক্সের মুখ খুলে দিতে হবে।
সারারাত মৌমাছি দের বদ্ধ ঘরে বেশ বিরক্তি কর অনুভূতি হয়েছে। সূর্যের কিরণ পড়তেই চতুর্দিকে মৌমাছি ছড়িয়ে পড়ছে। স্বভাবত মৌমাছিরা ট্রান্সফার হওয়ার প্রথম দিন ফুলের খোঁজ করতে থাকে।খোঁজার কাজ প্রথম দিনই বেশিরভাগ শেষ হয়।এরপর তাদের টিমের সবাই কে অবগত করার পর বনের ভিতরে ফুলের রেণু থেকে মধু নিয়ে আসার জন্য দল বেধে ছুটতে থাকে। চার-পাঁচ দিন পর মৌচাক মধুতে মধুময়। কিন্তু এটি অনেক পাতলা , এ মধুটি এখনও ভাঙার উপযুক্ত হয় নি। অন্তত ১০দিন পরে না ভাঙলে মধুর সকল গুণাগুণ পাওয়া যায় না। ১০-১২ দিন পর ম্যাগের কর্মিরা ফজরের নামাজ পরেই শুরু করেছেন প্রস্তুতি।ঠিক ধরেছেন মধু ভাঙার প্রস্তুতি!
মৌমাছির কামড় থেকে বাঁচতে ড্রেসআপ এবং চাক থেকে বৈজ্ঞানিক সিস্টেমে মধু ভাঙার জন্য মেশিন স্থাপন শেষে শুরু হল মধু ভাঙার কার্যক্রম। দুপর ১২টা পর্যন্ত অনেক গুলো বক্স ভাঙা হল।টানা এক সপ্তাহ ধরে ভাঙার পর সকল বাক্সে প্রথম বারের মত মধু ভাঙা শেষ হল।
এরপর সরাসরি সাতক্ষীরা মূল অ্যায়ারহাওজে নিয়ে আসা হল,এবং এখান থেকে ঢাকা ফ্যাক্টরিতে এসে প্যাকেজিং আর এর পর পরই আপনার হাতে প্রিয় ম্যাগ এর সুন্দরবনের মধু।
Reviews
There are no reviews yet.